মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বময় পরিস্থিতিতে সংযত আচরণ করুন: শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান
শ্রম দিবসের প্রেক্ষাপটে মালিক-শ্রমিক সম্পর্কের সংকট ও উত্তরণের পথ

কেন বাড়ছে মালিক-শ্রমিক সংঘাত?
১. ন্যায্য মজুরি ও সময়মতো বেতন না দেওয়া
বাংলাদেশের অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি দেওয়া হয় না। আবার বেতন-বোনাস বকেয়া রেখে মালিকপক্ষ অনৈতিক সুবিধা নেন। ফলে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে, যা কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নেয়।
২. কাজের অনিরাপদ পরিবেশ
কারখানায় অগ্নি দুর্ঘটনা, যন্ত্রপাতিতে আহত হওয়া, স্বাস্থ্যঝুঁকি ইত্যাদি কারণে শ্রমিকরা প্রতিবাদমুখর হয়। রানা প্লাজা ধসের পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছুটা উন্নত হলেও এখনও অনেক প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ বিদ্যমান।
৩. ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ সীমিত
শ্রমিকদের সংগঠন গড়ে তোলার অধিকার সংবিধানে থাকলেও অনেক মালিকপক্ষ ট্রেড ইউনিয়ন করতে বাধা দেন। ফলে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।
৪. শ্রম আইন অমান্য করা
বাংলাদেশের শ্রম আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) মেনে না চলার অভিযোগ রয়েছে অনেক শিল্প মালিকের বিরুদ্ধে। ওভারটাইম ভাতা না দেওয়া, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে বাধা দেওয়া ইত্যাদি সমস্যা এখনও প্রকট।
এই সংকট সমাধানের উপায় কী?
১. উভয় পক্ষের সংলাপ জরুরি
মালিকদের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া উচিত।
শ্রমিকদের সহিংসতা বা জবরদস্তিমূলক কর্মবিরতি এড়িয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা উচিত।
২. সরকারের কঠোর নজরদারি প্রয়োজন
শ্রম মন্ত্রণালয় ও শ্রম অধিদপ্তর-কে কারখানাগুলোতে নিয়মিত তদারকি বাড়াতে হবে।
ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ট্রেড ইউনিয়নের স্বাধীনতা দিতে হবে
শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার সুযোগ দিলে দাবি আদায়ের পথ সহজ হবে।
৪. মধ্যস্থতাকারী সংস্থার ভূমিকা
বাংলাদেশ শ্রম আদালত, বিসিআই, এফবিসিসিআই-এর মতো সংস্থাগুলোকে মালিক-শ্রমিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে এগিয়ে আসতে হবে।
শ্রম দিবসের অঙ্গীকার: শান্তিপূর্ণ সমাধান
#LaborDay ও #InternationalLabourDay-এ আমাদের অঙ্গীকার হোক—মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়ন এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা। সহিংসতা নয়, সংলাপ ও আইনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধানই টেকসই উন্নয়নের পথ।
0 Comments