দাবানলের আগুনে পুড়ছে জেরুজালেম, আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে ইসরায়েল

জেরুজালেমের চারপাশে বিশাল এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন জেরুজালেমের প্রধান প্রবেশপথ "রোড ১"-এর কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেটেলাররা দ্রুত পালাতে শুরু করেছে।
জরুরি অবস্থা: এই রাস্তায় মাঝপথে খুব বেশি নির্গমনের সুযোগ নেই, যার ফলে যানবাহন আটকে পড়ার শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। ইসরাইলিরা মাঝ সড়কে আটকা পড়েছে, গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ খুবই কম। তাই গাড়ি রেখেই খালি পায়ে পালাচ্ছে তারা।
আন্তর্জাতিক সহায়তা আসছে
ঘটনার পরপরই আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়ে ইসরায়েল আবেদন জানায়। এর প্রেক্ষিতে গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া, ইতালি ও সাইপ্রাস আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নেভানোর বিমান পাঠাবে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলে ভয়াবহ 'ফায়ারস্টর্ম'

ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় একযোগে দেখা দিয়েছে আগুনের তাণ্ডব—যা স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো 'ফায়ারস্টর্ম' নামে অভিহিত করছে। পুরো দেশজুড়ে প্রবল বাতাস বইছে, যার গতি ঘণ্টায় ১১০ কিমি পর্যন্ত পৌঁছেছে।
ইসরায়েলি আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক একটি পরিস্থিতি এবং আগুনের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার জন্য ঝড়ো হাওয়াই বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ এবং চিফ অব স্টাফ যৌথভাবে একে "জাতীয় জরুরি অবস্থা" হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারা বলেছেন, প্রাণ বাঁচাতে ও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে "সম্ভব সব বাহিনীকে" মাঠে নামানো হবে।
তদন্ত চলছে: ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে একযোগে ছড়িয়ে পড়া অগ্নিকাণ্ডের পেছনে জাতীয়তাবাদী উদ্দেশ্যপ্রসূত অগ্নিসংযোগের সন্দেহে তারা তদন্ত শুরু করেছে।
২০১০ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানল
ইসরায়েলে একযোগে ছড়িয়ে পড়া দাবানলকে ২০১০ সালের কারমেল অরণ্য অগ্নিকাণ্ডের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করা হচ্ছে। আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি, এবং ইসরায়েলি ফায়ার সার্ভিসের দলগুলো দমনে হিমশিম খাচ্ছে।
জেরুজালেম পাহাড় ও বেইত শেমেশ এলাকার চারপাশের বনাঞ্চল অত্যন্ত ঘন এবং সবুজে ঘেরা। প্রাথমিক বিশ্লেষণে ধারণা করা হচ্ছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা ছাড়া এটি সম্ভব নয়।
২০১০ সালের কারমেল অগ্নিকাণ্ডে ২৪টি দেশ—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, তুরস্ক, রাশিয়া, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যসহ—এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ আগুন নেভাতে বিমান, সরঞ্জাম ও কর্মী পাঠিয়েছিল। এবারের পরিস্থিতিও সেই মাত্রার বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
0 Comments